Latest Blogs
Life Carnival Blogs
জীবনযুদ্ধে “আহত” “নিহত” ও “বিজয়ী” মানুষদের জন্য (পর্ব-১)
আচ্ছা বলতো তোমরা কেউ তীর কিংবা গুলতি চিনকিনা? আশা করি অনেকেই চিনবে, তীরের তথা প্রকৃতির একটা ধর্ম চিন্তা করো, তীর নিক্ষেপের জন্য এটিকে যত পিছনে টেনে আনবে তীর টি ঠিক ততটাই দূরে আঘাতহানতে সক্ষম হবে, অর্থাৎ এটি তত দূরের লক্ষ্যমাত্রায় আঘাত হানতে সক্ষম হবে।
আর আমরাও যেহেতু প্রকৃতির সন্তান, অতএব আমাদের জন্যও এই একই ধর্ম, তোমারজীবনে তুমি যত রূড় বাস্তবতা বা পতনের সম্মুখীন হবে, তোমার তত বেশি মাত্রায়উচু আসনে আসীন হওয়ার সম্ভাবনা নিশ্চিত হবে। এছাড়া যারা "বিজ্ঞান" বিভাগেপড়েছ তারা "বিভবশক্তি" নামক একটি টার্ম এর সাথে পরিচিত, তো খেয়াল করেদেখোতো,তুমি একটি বস্তু কে যত উপর থেকে ছেড়ে দিবে,সেটি তত বেশি শক্তি নিয়েভুমিতে আঘাত হানবে। ঠিক অনুরূপ বিভবশক্তি ই আমাদের জীবনের উত্থান-পতনপ্রভাবিত করে। তোমরা নিশ্চয়ই (জীবনের প্রথম বয়সে)খেটে খাওয়া অনেক দীনমুজুরকিংবা দূর্দশাগ্রস্ত মনীষী কে চিন যারা আজ জগতে অমর হয়ে আছে তাদের কৃতকর্মদিয়ে। অতএব পতনগুলো হলো এক একটি সংকেত, যা তোমার সুবিদার্থেই বিধাতা তোমাকেপাঠাচ্ছে যাতে করে তুমি বুঝতে পারো যে তোমার জন্য তিনি অনেক বড় বিশেষ কিছুরেখেছেন, যেটির অর্জনের জন্য তোমাকে মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে,অনেকশক্ত থাকতে হবে।
একবার এক প্লেন দুর্ঘটনায় শুধু একজন বাদে সবাই মারাযায়, প্লেনটা ক্র্যাশ করে একটা দ্বীপে। নির্জনদ্বীপ। জনমানবসংকীর্ণ দ্বীপেরচারিদিকে শুধু পানি আর পানি। কিন্তু তাকে উদ্ধার করার মতো কোন জাহাজওআশেপাশে চোখে পড়ছেনা। দিনযায়, মাসযায়- লোকটি আশায় থাকে কোনও জাহাজ হয়তোতাকে দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে নিয়ে যাবে কিন্তু আশায় আশায় শুধু দিন কেটে যায়তবু আশা মিটেনা। এদিকে একাকি দ্বীপে থাকার জন্য লোকটি ইতিমধ্যে একটা ছোট্টকুঁড়েঘর বানায় আর সে ঘরের মধ্যে থেকেই সারাদিন শুধু দ্বীপের মাঝে তাকিয়েথাকে আর ভাবতে থাকে এই বুঝি কেও উদ্ধার করতে এলো। অবশেষে লোকটি শুধুদীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে, "সৃষ্টিকর্তা-তুমি দেখো"। একদিনের ঘটনা, আজও লোকটিআগের মতোই দ্বীপের দিকে তাকিয়ে রয়েছে কিন্তু বেলা যতো গড়াতে লাগলো লোকটিরততোই ক্ষুধা পেতে লাগলো। যা ফলমূল ছিল সবশেষ হয়ে গেছে! অগত্যা,লোকটি খাবারজোগাড় করতে কুটির ছেড়ে বেরিয়ে পড়ে এবং বেশ কিছুক্ষণ পর যখন আবার খাবার নিয়েকুটিরে ফিরে আসে, দেখতে পায় তার উনুনের জ্বালানো আগুন থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়েতার ছোট্ট কুটিরে আগুন ধরে গেছে এবং আগুন প্রায় সম্পূর্ণ কুটিরটাকেইপুড়িয়ে ভস্ম করে ফেলেছে! লোকটি আর সহ্য করতে পারেনা। সে প্রচণ্ডরাগে-ক্ষোভে আর দুঃখে চিৎকার করে বলে ফেলে, "হে ঈশ্বর! তুমি আমার থেকে আমারপরিবারকে দূরে সরিয়ে এই নির্জনে এনে ফেলেছো, এখন আবার আমার সামান্যকুটিরটাকেও তুমি জ্বালিয়ে দিলে; এমনকাজ তুমি কিভাবে করতে পারলে!!" কথাগুলোবলেই লোকটি কান্নায় ভেঙেপড়ে, এমনসময় দ্বীপের ধারে একটাছোট জাহাজ এসে ভেড়েআর তার থেকে কিছু লোক বেরিয়ে এসে হারানো লোকটির কাছে এসে সাহায্য চায় কিনাজানতে চায়। লোকটি তখন কান্না থামিয়ে জানতে চায়,তারা তাকে কিভাবে খুঁজে পেল।জবাবে তখন জাহাজের লোকগুলো বলে, "আমরা দূর থেকে এইদ্বীপে আগুন আর ধুঁয়াদেখে বুঝে নিই কেও হয়তো সাহায্য চাইছে তাই এখানে এসেছি"। কথা গুলো শুনেলোকটি সৃষ্টিকর্তার অনুগ্রহপেয়ে বিস্মিত হয়ে যায়।সে বুঝতে পারে, "সত্যিইআজকে তার ঘরে আগুন না লাগলে এইদ্বীপ থেকে হয়তো কোনোদিনও সে ছাড়া পেতোনা!!" – সৃষ্টিকর্তা মানুষের ভালোর জন্যই সবকিছু করেন কিন্তু মানুষ আমরাই ভুল করেসৃষ্টিকর্তার অনুগ্রহকে অস্বীকার করি; দেখতে চাই চাই না আসলে তিনি আমাদেরজন্য কি রেখেছেন!! ফলে অসন্তুষ্ট হয়ে গালমন্দ করতে থাকি নিজেদের ভাগ্যকে!!সুতরাং সৃষ্টিকর্তার অনুগ্রহের অপেক্ষায় থাকো, নিশ্চিত তোমার সামনে এমনকোনও কিছু অপেক্ষা করছে যা তোমার জীবনটাকেই বদলে দেবে!!!!
এছাড়া, তুমি জানো "কষ্ট করলে কেষ্ট মিলে", বড় অর্জনের জন্য একটু বড় বড় ঢেউতোমাকে সহ্য করতেই হবে।আর সেজন্যই তোমার জন্য বিধাতার এই বার্তা, সতর্কতাস্বরূপ। তবে "পতন" কে তুমি কিভাবে মূল্যায়ন করবে আর কি সিদ্ধান্ত নিবেসেটির মাদ্যমেই তোমার ভবিষ্যৎনির্ধারিত হবে।
একটি ঘটনা শেয়ার করি,
৮০ বছর বয়স্কা এক বৃদ্ধা এক ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হলেন।প্রথম দিন ক্লাসেআসলে বৃদ্ধ বয়সে তার এমন পড়াশুনার প্রতি ঝোঁক দেখে সবাই তার কাছে জানতেচাইলো যে এই বয়সে কেন তিনি এমনটা করলেন। বৃদ্ধা হাসি মাখা মুখে জানালেন, "আসলে আমার নামে কোনও একাডেমিক ডিগ্রী নেই।তাই আমার খুব ইচ্ছা একটা ডিগ্রীঅর্জন করা আর তাই এ স্বপ্ন পুরন করতেই আমি ভার্সিটি ভর্তি হয়েছি”।
ক্লাসে সবাই বৃদ্ধাকে একজন অভিভাবক কিন্তু সুন্দর বন্ধু হিসেবে মেনে নিলো।বৃদ্ধা যেখানেই যেতেন সেখানেই তাঁকে সবাই তার জন্য শ্রদ্ধার সাথে আসন ছেড়েদিত। সুযোগ পেলেই সবাই তার কাছে তার জীবন সম্পর্কে জানতে চাইতো। কিভাবেতিনি তার দীর্ঘ এ জীবন পার করেছেন ,কিভাবে সকল বাঁধাকে উপেক্ষা করে আজএতদূর আসতে পেরেছেন- এ সব ব্যাপারে তার কাছে সবাই জিজ্ঞাসা করতো।দেখতেদেখতে ৪ টি বছর কেটে যাই।ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হবার পর একদিন কলেজে অতীতেরসকল ছাত্র ছাত্রীদের নিয়ে এক আনন্দসভা ও পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়। আনন্দসভায় সেই বৃদ্ধাকে একটি ভাষণ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়।সকলের অনুরোধেবৃদ্ধা ভাষণ দিতে স্টেজে উঠতে গেলে হঠাৎপা পিছলে পড়ে যান।বৃদ্ধার এমনঅবস্থা দেখেসবাই কিছুটা বিব্রত বোধ করলেও বৃদ্ধা কারও দিকে না তাকিয়ে হাসিমুখেই ভাষণ দিতে শুরু করেন এবং শুরুতেই মাইক্রোফোনের সামনে বলেন, “পড়েগেছিলাম বলেই এখানে উঠতে পেরেছি ।যখন উঠতে গেছি তখন আমার ধারনা হয়েছে এতোউঁচু জায়গার উপর আমি উঠতে পারবো না।ঠিক তাই হয়েছে- চেষ্টা করা মাত্র পড়েগেছি। আর যখনই পড়ে গেছি তখনই মাথাই চিন্তা এসেছে আমি উঠেই ছাড়বো আর তাইউঠতে পেরেছি। তার মানে এখানে আমার জন্য পড়ে যাওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তানা হলে উপরে ওঠার মতো মানসিকতার সৃষ্টি হতো না”।
"সুউচ্চ পর্বতে আরোহন করতে গেলে অবশ্যই প্রথম পদক্ষেপটা একেবারে নিচের দিকেই থাকে।"--উইলিয়াম শেক্সপিয়ার
সম্ভবতঃ স্রস্টার ইচ্ছায় এটি কাউকে আরো বড়ো কিছু স্বপ্ন দেখার,সাহস করারএবং উদ্যোমী হওয়ার স্পৃহা যোগাবে,তাই এই পিছিয়ে পড়া।যেমন মার্কযুকারবার্গ,বিল গেটস,স্টিভ জবস............... প্রমুখ মানুষগুলো।তোমাদেরবয়সে তারা কিন্তু আজকের অবস্থানে ছিলেন না, সৌ তোমার সেভাবে চিন্তা করতেসমস্যা কোথায়?
আর এটাই সত্য।মাঝে মাঝে পিছিয়ে পড়াকে পিছিয়ে পড়াও বলেনা।যেমনটি "তীর" এর নিক্ষেপন থেকেই আমরা দেখতে পাই।
অতএব লেখাটির শীরোনাম অনুসারে যারা এইস এস সি পরীক্ষায় আহত, নিহত হয়ে হতাশহয়ে আছ তাদের জন্য হতাশ না হওয়ার জন্যই এত কথা লিখলাম শুরুতে। যারা আহতঅর্থাৎবিভিন্ন ভার্সিটি ভর্তির রিকোয়ারমেন্ট হিসেবে যে পয়েন্ট দরকার তাযাদের আসেনি তাদের হতাশ হওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই। সবচেয়ে বেশি এইআনন্দঘন(তোমরা যেটিকে বিপরীত ভাব আর কি!) পরিস্থিতির শিকার বুয়েট ভর্তিইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা। যারা শুধুমাত্র ইংলিশ-এ এ+ মিস করেছে বিঁধায় বুয়েটেভর্তি পরীক্ষা দিতে পারবে না। আমি বলব এটাই তোমার সবচেয়ে বড় সুযোগ নিজেরচুড়ান্ত স্বপ্ন দেখার ও লক্ষ্য স্থির করার। এতদিন তোমার সব চিন্তা-ভাবনাছিল বুয়েট পর্যন্ত, কিংবা বুয়েট কে ব্যবহার করে অন্যকিছু,কিন্তু এখন তুমিতার চেয়ে বড় চিন্তা করো। বুয়েটে পড়ে তুমি প্রকৌশলী হতে, সবশেষ,ভালস্যালারীর একটি জব করতে, এই তো? আর কিছু? কিন্তু এটাই কি তোমার জীবনেরলক্ষ্য হওয়া উচিত?
অবশ্যই না! তাছাড়া,যাদের অন্য ভার্সিটির জন্য প্রয়োজনীয় পয়েন্টও আসেনিতাদের বেলায়ও একই কথা।আসেনি তো আসেনি শেষ,এ নিয়ে আর মাথা ঘামানোর দরকারনেই।You have enough potentiality to take things differently and start differently! সবার মতো কেন চিন্তা করো?
আমি বলব তোমার লক্ষ্য হবে তোমার পছন্দের ফিল্ডে তোমার সামর্থের সর্বোচ্ছটুকু অর্জন করার।তুমি এমন কিছু হবে কেন যা সবাই হয়? কেন??? (কথাগুলো এইস এসসি তে আহত-নিহত সবার জন্যই!)
এই প্রশ্নের উত্তর দাও! আইনস্টাইন বলেছে, "The one who follows the crowd will usually get no further than the crowd, The one who walks alone, is likely to find himself in places no one has ever been"
এখন বলো,তোমার কিসের অভাব??? টাকার অভাব? তাহলে বড় কিছু হতে এটি মোটেও পূর্বশর্ত নয়।
একেবারে নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগের অভাব? তাহলে খোঁজ নিয়ে দেখোতো হার্ভার্ড,অক্সফোর্ড,এম আই টি,ইয়েল এর কয়জন শিক্ষক ওসব ভার্সিটি কিংবাইন্সটিটিউট থেকে অনার্স করেছে? যে সংখ্যাটি আছে সেটি তোমার অভাববোধ করারকোনো যৌক্তিকতা দেখাচ্ছে না! তুমি দেখবা ঐসব শিক্ষকদের অনেকে এমন ভার্সিটিথেকে অনার্স করেছে যেগুলো বিশ্বের টপ ২০০০বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যেও নেই! যদিতোমাকে কাছের উদাহরন দেই, তবে চলে আসবে একজন প্রফেসরের কথা যাকে আমি চিনি ,তোমারও চেনা উচিত,তিনি গওহর রিজভী,প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, উনি ঢাকাভার্সিটির স্টুডেন্ট ছিলেন, কিন্তু অক্সফোর্ড ,হার্ভার্ড সহ নামকরা অনেকপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকতা করছেন। এছাড়া বহু মানুষ ঢাবিঃ এর চেয়েও অনেক কমরিনাউন্ড প্রতিষ্ঠান থেকে পাস করেও বিশ্ব চষে বেড়াচ্ছেন।
এখন বলো তবে তোমার আর কি নেই বা কিসের অভাব, যেটির কারনে তুমি নিজেকে নিয়েবড় স্বপ্ন দেখতে কিংবা তা বাস্তবায়ন করতে ভয় পাচ্ছো,সাহস পাচ্ছোনা? নিজেকে বিশ্বাস করছো না?
মেধা নেই?
সত্যি? আচ্ছা ঠিক আছে, আমাদের তোমার সেই মেধার দরকার নেই,যা তোমার নেই।দেখো নিউটন কি বলেছে,
"If I am anything, which I highly doubt, I have made myself so by hard work" অতএব আমাদের এরকম কাউকেই দরকার যার মেধা না থেকেই এত কিছু করে পরিশ্রম দিয়ে। তাই অভিযোগ করার অভিযান এখানেই ক্ষ্যান্ত দাও!
তুমি যেখানেই ভর্তি হও না কেন, কিংবা অকৃতকার্যরা পুনরায় পরীক্ষা দিয়েনতুনভাবে যখনি শুরু করবে তখন থেকেই তুমি নতুন উদ্যমে সব কিছু শুরু করবে, কেউ তোমাকে আটকে রাখতে পারবেনা।
তুমি বুয়েটে পড়তে পারনি? তুমি ঢাবিঃ তে পারনি? কিংবা এইবার অকৃতকার্য হয়েছো?
ওকে, এসব মোটেও ব্যাপার না, বিশ্বাস করো, এসব হলো বৈচিত্র। এ পৃথিবীতেআল্লাহ মানুষের কর্মফল কিংবা অন্য যেকোন কারনে একেকজন কে একেকরকমপরিস্থিতির মধ্যে নিপতিত করে, এতে একেকজনের অনুভূতি একেকরকম হয়, একেকজনেরপ্রতিক্রিয়া একেকরকম হয় এবং একেকজনের পরবর্তী পদক্ষেপ ভিন্ন ভিন্ন হয়। কেউহারিয়ে যায়। কেউ আফসোসে পরবর্তী দিনগুলো কাটে আবার কেউ অতীতে আরো বেশিউদ্যমে পৃথিবী এবং নিজের রাঙাতে জীবন যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে। এখন তুমি কি চাও? হতাশ হয়ে হারিয়ে যেতে চাও নাকি নিজের স্বপ্নের পিছনে ছুটতে চাও? যেকরেই হোকনিজের স্বপ্নের বাস্তবায়ন চাও?
স্বপ্নের পিছনে লেগে থাকতে হবে, বড় হতে হবে। আর হাল ছেড়ে দেয়াটা, স্বপ্নহারিয়ে যেতে দেয়াটি হচ্ছে জীবনযুদ্ধে পরাজিত হওয়া কিংবা যুদ্ধক্ষেত্র থেকেপলায়ন করার ন্যায়।অতএব তুমি তরুণ, তোমার মাঝে অফুরন্ত সম্ভাবনা, তুমিনজরুলে “যৌবনের গান” পড়েছ, তাই তুমি জানো তারুণ্যের শক্তি সামর্থ কোথায়।একটি ঘটনা শেয়ার করছি,
#শিক্ষক তার ক্লাসে যার যার জীবনের লক্ষ্য কি; সে ব্যাপারে লিখতে দিয়েছেন।ক্লাসের সর্বশেষ বেঞ্চে বসা ছেলেটি বসে শুধু ভাবছিল সে কি লিখবে। বেশ কিছুসময় পর ছেলেটি দশ পৃষ্ঠার একটি বিশাল নোট পেপার লিখে শিক্ষকের হাতে দিল।
শিক্ষক বেশ কিছু সময় নিয়ে রচনাটি পড়ে তা ছিঁড়ে ফেললেন এবং বললেন এমন উদ্ভট রচনা আর কখনও লিখবে না!
ছেলেটি জানতে চাইলো সে এমন কি লিখেছে যার কারনে রচনাটি ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে!!
শিক্ষক বললেন,"তুমি লিখেছ তোমার স্বপ্ন নাকি নিজস্ব একটা ঘোড়ার খামার দেবেযেখানে পৃথিবীর সব দূর্লভ জাতের ঘোড়া থাকবে!! এটা কি করে সম্ভব!!! তোমারনা আছে টাকা আর না আছে তোমার বাবার বিশাল জমি যেখানে করবে ঘোড়ার খামার!!তাই এমন আকাশ কুসুম না ভেবে ভালো কিছু ভাবো যেখানে তোমার ভবিষ্যৎগড়তেসমস্যা হবে না! সুতরাং তুমি আগামিকাল আবার তোমার জীবনের লক্ষের ব্যাপারেবাসা থেকে লিখে আনবে,আমি আগামিকাল আবার তা দেখবো"!!!
শিক্ষকের মুখে এমন কথা শুনে ছাত্রটি তার বাড়িতে যেয়ে তার বাবাকে স্কুলের সব ঘটনা খুলে বলল।
জবাবে বাবা এবারে বললেন,"যা কিছুই করো সেটা মন দিয়ে করো,অবশ্যই তাতে ফল পাবে"।
বাবার মুখে এমন কথা শুনে ছেলেটি আবার রচনা লিখতে শুরু করলো এবং আগের মতোই সেই একই লেখা লিখে নিয়ে পরদিন শিক্ষকের হাতে দিয়ে বলল,"আপনি ওটা আবার ছিঁড়ে ফেলতে পারেন,কিন্তু আমি আমার স্বপ্ন কখনই ভেঙ্গে ফেলবো না"!!!
এরপর কেটে যায় বেশ কিছু বছর!!
স্কুলে তখন পর্যন্তও সেই শিক্ষকটি কর্মরত কিন্তু সেই ছেলেটি পড়াশুনার পাঠ চুকিয়েছে অনেক আগেই!!
স্কুলের পিকনিকের সময় শিক্ষক তার ক্লাসের সকল ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে উপস্থিতহয় একটি অত্যাধুনিক পিকনিক কর্নারে। এদিক সেদিক ঘুরতে ঘুরতেই দেখা হয় সেইছেলেটির সাথে। শিক্ষক জানতে চান এখন সে কি করছে!!
জবাবে ছেলেটিবলল,"আমি অনেক কষ্ট করে ছোট্ট এক টুকরো জমিকিনি,এরপর নেমে পড়ি ঘোড়া শাবকের সন্ধানে। ধীরে ধীরে বিভিন্ন জায়গা থেকে আমিভালো সাড়া পেতে থাকি। এবং বর্তমানে আমার কাছেই রয়েছে সকল প্রজাতিরমূল্যবান সব ঘোড়া যা বিক্রয়ের মাধ্যমে অর্জিত আয় দিয়ে আমি তৈরি করেছি আরওবেশ কটি খামার এমনকি এই পিকনিক স্পটতিও আমারই তৈরি!!"
এতক্ষণ বাদে শিক্ষক মুখ খুললেন আর বললেন,"সত্যিয় তুমি আমাকে মুগ্ধ করেছো!!এতো বছরে আমি শত শত ছেলে মেয়েদের স্বপ্নকে কেড়ে নিয়েছি অথচ একমাত্র তুমিইতোমার স্বপ্নকে আগলে রেখে তাকে ধরে রেখেছ।তোমার আরও উন্নতি হোক-এই কামনাকরি।!!
অতএব, নিজের স্বপ্ন গুলোকে পিষে মারবে না, কেড়ে নিতে দিবে না অন্য কাউকে!!নিজের স্বপ্ন আর ইচ্ছা গুলোকে আগলে রেখেই চলার চেষ্টা করো। চেষ্টা করতেথাকো, অপেক্ষা করতে শিখো,একাগ্রচিত্তে লেগে থাকো আর পাহারা দাও নিজেরইচ্ছাগুলোর প্রতি যেন অন্য কোনও মোহ বা লোভ এসে তোমার স্বপ্নগুলোকে চুরিকরে না নিয়ে যায়।
যে কোনও কিছুতে সফল হওয়া যায়- যদি তুমি সত্যি সত্যিই তাতে সফল হতে চাও!!!
এসব মোটেও কোনো বিশাল কিছু নয় যে তোমার চিন্তাজগতে এভাবে পরিবর্তন আনা।জগতে বহু উদাহরণ আছে সংকট থেকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌছানোর উপর। তোমাকে বড়হতেই হবে! তুমি কে তুমি? জানো? তোমার কি যোগ্যতার অভাব? সব আছে, সব!আব্দুল্লাহ আবু সাইদ স্যার প্রায়ই বলেন মানুষের মধ্যে একটি দৈত্য আছে,সেএটির পথ উন্মুক্ত করে দিলেই পারে। (চলবে...)
© Copyright 2023 || All rights reserved by Life Carnival Team
Nazmul
Nov 15, 2014 22:44 pmName
May 15, 2014 15:55 pm08.11.1994
Aug 05, 2013 16:53 pm