Latest Blogs
Life Carnival Blogs
হতাশ মানুষের সংখ্যা কমুক বহুগুনে
পৃথিবী সৃষ্টির পর থেকে আজ পর্যন্ত এই সৃষ্টি জগতে মানব জাতির মাধ্যমে প্রতিটা সেক্টরেই অভূতপূর্ব পরিবর্তন হয়েছে। যেমন লতা পাতা গায়েদেয়া মানুষের গায়ে অনেক সুশ্রী পোশাক এসেছে। চামড়া আর পাথরে লিখার বদলে সুন্দর এবং মসৃণ খাতা কলম এসেছে। যোগাযোগের জন্য মানুষ পাঠানোর পরিবর্তে প্রথমে চিঠি পরবর্তীতে ফ্যাক্স এবং তার পরে ইমেইল এর ব্যবহার শুরু হয়েছে। খাবার দাবাড়ের বেলায় প্রথমে গাছ পালা থেকে যা পাওয়া যায় তা খাওয়া, তার পরে আস্তে আস্তে অনেক পরিবর্তন, এখন ফুড ইন্ডাস্ট্রিও নেহায়েত কম নয়। আমাদের চিন্তা ভাবনা এবং কালচারে প্রচুর পরিমানে পরিবর্তন হয়েছে।মানব জীবনে এতো পরিবর্তনের পরেও কিন্তু একটা দিক খুবই মন্থর গতিতে এগুচ্ছে, পিপীলিকা আর কচ্ছপের ন্যায়। পৃথিবী চলার গতিবেগ যখন আলোর গতিবেগের ন্যায় ঠিক তখনি মানব সমাজে নিজ নিজ পছন্দের বিষয়ে পড়াশোনা এবং কাজ করার গতিবেগ পিপীলিকা আর কচ্ছপের গতির চেয়ে বেশি নয়। পৃথিবী সৃষ্টির পর থেকে এখন পর্যন্ত মানব সমাজে পছন্দসই বিষয় পড়া এবং পছন্দের বিষয়ে কাজ করার পুরো প্রক্রিয়াটা ব্যাখ্যা করছি।
মানুষ সামাজিক জীব, সৃষ্টির পর থেকেই একত্রে বসবাস করার একটা প্রথা প্রচলিত এবং এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আর ভবিষ্যতেও থাকবে। যার দরুন একসাথে থাকা আর একসাথে চলাফেরার প্রথা অনুযায়ী প্রত্যেক পিতা মাতা তাদের সন্তান নিয়ে নানামুখী পরিকল্পনায় লিপ্ত। যেমন যে ঘরে বাবা কামার তার সন্তান যে কামার হবে এইটাই স্বাভাবিক, একটা সামাজিক নিয়ম। বাবা-মাও একই রকম একটা মানসিকতা পোষণ করে, এবং সন্তানের কর্ম ক্ষেত্রকেও পূর্বপুরুষের কর্ম ক্ষেত্রের পথে পরিচালিত করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করে। যদি মুখের কথায় কাজ না হয় তাহলে প্রথমে চলে ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল, তাতেও কাজ না হলে চলে লাঠিচার্জ। তাদের এককথা একদাবি যে কোন মূল্যে আমাদের দেখানো পথেই তোমাকে চলতে হবে। যদি তুমি স্বেচ্ছায় না পার তাহলে জোর করেই করতে হবে। সন্তান বড় হতে থাকে পিতামাতার ইচ্ছায়। সৃষ্টিকর্তা যে একেকটা মানুষের ভিতরে একেকটা কোয়ালিটি অসীম পর্যায়ে দিয়েছেন এটা নিয়ে কেউ মাথা ঘামায়না, আর তার ভিতরে কোন বিষয়টা পড়ার বা কোন কাজটা করার অধিক ক্ষমতা বিদ্যমান সেই দিকটা কেউ খুঁজেই দেখেনা এবং দেখতে সাহায্যও করেনা। এই চিন্তা ভাবনাগুলো যেমন আদিম সমাজে ছিল, ঠিক একই রকম ভাবে এই সমাজেও বিদ্যমান।
অবাক করার বিষয় হল, আদিম সমাজে সন্তানদের জোর করার প্রবণতা কম ছিল কিন্তু এখন সেটা কল্পনার মাত্রাকেও ছাড়িয়ে গেছে। দুই তিন হাজার বছর আগে মানুষের চাহিদা ছিল খুবই কম, খাবারের যোগান দেয়া, থাকার ব্যবস্থা করা আর বেশি হলে একটু আমোদ ফুর্তি করা। কিন্ত এখন মানুষের চাহিদা হাজারকেও ছাড়িয়ে গেছে। সচেতনতাবোধ বেড়েছে, সামাজিক মুল্যবোধ আর ইগোর হাইটেম্পারেচার, যার দরুন প্রত্যেক পিতা মাতা তার নিজ নিজ সন্তানকে নিজেরাই নিজেদের পছন্দসই সাবজেক্ট বা একটা ডিপার্টমেন্ট পছন্দ করে সমাজের আইকন হওয়ার জন্য নানামুখী প্রতিযোগিতার মধ্যে ছেড়ে দিচ্ছে। যার দরুন দিনের শেষে দেখা যায় রেজাল্ট হিতের বিপরীত হয়। কারন বেশীর ভাগ সন্তানই তাদের পছন্দের বিষয় পড়তে না পারার ফলে, তার ক্রিয়েটিভিটির সাথে মানানসই কাজটি না করতে পারার ফলে বাস্তব জীবনে হতাশায় ভোগে, জীবন হয়ে যায় হতাশাময়। যতদিন পর্যন্ত সন্তান অবুঝ থাকে পড়ালেখা চলে প্রতিযোগিতার সাথে সাথে। সমস্যাটা বাঁধে সন্তান যখন বড় হতে থাকে, পরিশ্রম আর রেজাল্ট এর সমীকরণ যখন মিলাতে পারেনা তখন পড়াশোনার প্রতি অনীহা আর উদাসীনতা আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে। যদি সে ইচ্ছার বিরুদ্ধে অধিক পরিশ্রম করে রেজাল্ট ভাল করেও, তাহলেও সেখানে সব শেষ হয়না, কর্ম জীবনে শুরু হয় অপছন্দের কাজ করা নিয়ে হতাশা। যার দরুন আমরা নিজেরাতো ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছিই সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে আমাদের সমাজ, আর দেশ, কারন প্রোডাক্টিভ মেধার সংখ্যা অভূতপুর্ব ভাবে কমে হতাশাময় মেধার সংখ্যা দিনে দিনে কল্পনাতীত ভাবে বাড়ছে। যার দরুন দেশ এবং সারা পৃথিবীতে বেকারত্ত্বের সংখ্যা বাড়ছে, কর্মস্থল হচ্ছে হতাশাময়। তাহলে কি আমরা আর পড়ালেখা করবনা? অবশ্যই করব, একশো বার করব, তবে নিজ নিজ পচ্ছন্দের বিষয়ে, প্রত্যেকের ইস্পেশাল ক্রিয়েটিভিটির বিষয়ে, তাহলে পড়াশোনাকে আর পড়াশোনা মনে হবেনা খেলা মনে হবে। মানুষের ভিতরে অভূতপুর্ব আনন্দ বিরাজ করবে, খাওয়া-দাওয়া-নাওয়া সবকিছু সে পড়াশোনা আর কাজের মধ্যেই দেখতে পাবে। হতাশ মানুষের সংখ্যা বৈপ্লবিকভাবে কমবে। কর্ম জীবনে স্বাভাবিক মানুষের সংখ্যা বাড়বে। এক কথায় প্রোডাক্টিভ মানুষের সংখ্যা দেশে চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়বে। পৃথিবী ধেয়ে চলার গতিবেগের সাথে মানব জীবনের ছুটে চলার গতিবেগ সমবিন্দুতে এসে পৌঁছাবে।
লাইফ কার্নিভাল দুনিয়া জুড়ে হতাশ মানুষের সংখ্যা কমানোর লক্ষ্যে, প্রত্যেককে তার নিজ নিজ ক্রিয়েটিভিটির জায়গাটা আবিস্কার করার লক্ষ্যে কাজ করছে এবং করে যাবে। লাইফ কার্নিভাল বিলিভ করে এইভাবে যদি প্রত্যেকে তার নিজ নিজ পছন্দের কাজটি করতে পারে তাহলে দিনে দিনে সফল মানুষের সংখ্যা চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়তে থাকবে। কর্মস্থলে হতাশ মানুষের সংখ্যা কমবে বহুগুনে। দেশে বেকারত্ব দূ্র হবে, সাধারণ মানুষ মানব সম্পদে রূপান্তরিত হবে। আর এই বিষয় গুলো সফল ভাবে বাস্তবায়ন করার জন্য যা যা করা দরকার তা করার জন্যই লাইফ কার্নিভাল বদ্ধ পরিকর।
© Copyright 2023 || All rights reserved by Life Carnival Team
Nazmul
Nov 15, 2014 22:44 pmName
May 15, 2014 15:55 pm08.11.1994
Aug 05, 2013 16:53 pm